BREAKING NEWS - W.P.L.O.C.K.E.R...C.O.M
Search

সীতাকুণ্ডে ‘অপারেশন অ্যাসল্ট-১৬’, প্রায় ২০ ঘণ্টার শ্বাসরূদ্ধকর অভিযান

বিশেষ প্রতিবেদক ::


জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাবার পর বুধবার বিকেল তিনটায় সীতাকুণ্ডের কলেজ রোডের চৌধুরীপাড়ার প্রেমতলা এলাকার ছায়ানীড় ভবনে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরপর চলে জঙ্গিদের গ্রেনেড বিস্ফোরণ, উভয় পক্ষে গুলি বিনিময়। একসময় পরাস্ত হয় জঙ্গিরা, কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়, কেউ আত্মঘাতী হয়ে জীবন দেয়।

এর মধ্যে ওই ভবনে আটকে পড়ে ৮টি পরিবারের প্রায় ৩০ জন সদস্য। তাদের নিরাপদে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য এই অভিযান চালানো ছিল দুঃসাহসিক কাজ। কিন্তু জঙ্গি আস্তানা থেকে এসব জিম্মিদের উদ্ধারে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় ২০ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই শ্বাসরূদ্ধকর অভিযান সফলভাবে সমাপ্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, বুধবার দুপুরে সীতাকুণ্ড পৌরসভার লামারবাজার আমিরাবাদের সাধন কুটির থেকে জঙ্গি দম্পতিকে তাদের এক শিশুসন্তান সহ আটক করা হয়। সাধন কুটিরের মালিকই মূলত তাদের ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রেমতলার ছায়ানীড় ভবনে আসে পুলিশ।

বুধবার দুপুর তিনটা থেকে মূলত অপারেশন শুরু হয়। ছায়ানীড় ভবনের নিচতলায় এই আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে ভেতর থেকে তিনটি হাতবোমা ছোঁড়ে জঙ্গিরা। এতে সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেলসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর পুলিশ পিছু হটে পুরো আস্তানা ঘিরে রাখে।

এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে সিএমপির সোয়াত টিম। রাত ৮টার দিকে সিএমপির সোয়াত এবং জেলা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত টিম গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সড়ক থেকে আস্তানায় প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় হ্যান্ডমাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বানও জানায় পুলিশ। কিন্তু জঙ্গিরা ভেতর থেকে গ্রেনেড ছুঁড়ে প্রতিরোধ করতে থাকে। এই অবস্থায় ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষ টিমকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য বলা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ভোর ৫টায় ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় ঢাকার সোয়াত টিম। ডিএমপির সোয়াত টিমের নেতৃত্বে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ‘অপারেশন অ্যাসল্ট-১৬’ অভিযান শুরু করে সিএমপি সোয়াত, জেলা পুলিশ, সিএমপির বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, র‌্যাব ও পুলিশের সম্বন্বয়ে গঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এসময় ভবনের ভেতর থেকে বিকট শব্দ শোনা যায়। অভিযানে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া ২০ জনকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া নারীসহ চার জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, এটা ছিল আমাদের জন্য একটা দুঃসাহসিক অভিযান। নিজেদের নিরাপদে রেখে ও জিম্মিদের নিরাপত্তা বজায় রেখে অভিযান চালানো ছিল একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। ভবনের ভেতরে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ছিল, রোগাক্রান্ত মানুষ ছিল। জিম্মিদের যেন কোন ক্ষতি না হয় সেটাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। সবদিক ঠিক রেখে সফলভাবে আমরা অভিযান সম্পন্ন করেছি।

দুটি জঙ্গি আস্তানা ‘নব্য জেএমবি’র মন্তব্য করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল বিদেশিদের ওপর হামলা করে মিরসরাই-সীতাকুণ্ড অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করা। আমরা নিশ্চিত এরা নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্র সংগঠন ‘নব্য জেএমবি’। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় ধরনের নাশকতার লক্ষ্যে প্রচুর গ্রেনেড ও বিস্ফোরক মজুদ করেছিল আস্তানায়।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, গত রাত থেকে ছায়ানীড় ভবনে বার বার অভিযান চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ভেতর থেকে জঙ্গিদের প্রতিরোধের কারণে তা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে সোয়াতের একটি টিম পাশের আরেকটি ভবনের ছাদে উঠে ছায়ানীড় ভবনের দিকে আগানোর চেষ্টা করে। তা দেখতে পেয়ে দুই জঙ্গি ছায়ানীড়ের ছাদের ওপর উঠে




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *