শেফালী দেবী (সীতাকুণ্ড) ::
সীতাকুণ্ড থানার দক্ষিণ ইদিলপুরে অবস্থিত কুমারপাড়া। একসময় এখানে মাটির শিল্পকর্ম করে জীবন নির্বাহ করতো প্রায় সব পরিবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বর্তমানে মাত্র দুই পরিবার এই শিল্পটাকে কোনভাবে টিকিয়ে রেখেছে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মাটির শিল্পের কদর নেই বললেই চলে। কুমার শিল্প বিলুপ্তির ইতিহাস সম্পর্কে বলছিলেন কুমারশিল্পী সবিতা রানী পাল।
তিনি বলেন, এখন আগের মতো মাটির জিনিষের কদর নেই। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক আর এ্যালুমিনিয়ামের জিনিষপত্র বের হওয়ার কারনে মাটির জিনিষ মানুষ আর ব্যবহার করতে চায় না। তবে শীতকালে শীতের পিঠা বানানো জন্য খোলা আর সরা এই দুইটা জিনিস মোটামুটি চলে।
কুমার শিল্পী জগদীশ চন্দ্র পাল কয়েক ধরনের মাটির জিনিষ যেমন- হাড়ি পাতিল, খোলা, সরা এসব নিজে তৈরি করে এবং গ্রামে কিংবা বাজারে বিক্রি করে। যা আয় হয় তা দিয়ে চলে তার সংসার। এ পাড়ায় ঐতিহ্যবাহী অনেক কুমারশিল্পী রয়েছে যারা এখন আর মাটির জিনিষপত্র তৈরি করে না। তারা অন্য পেশায় নিজেদের স্থানান্তর করে নিয়েছে। কুমার শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখা এবং জীবন নির্বাহের ত্যাগিদে এখনো মাটির তৈজসপত্র তৈরি করে যাচ্ছে পুষ্প রাণী পাল আর শিপন পাল।
কুমার শিল্পে মানুষ ইদানিং তেমন একটা আগ্রহী নয়। আয় থেকে ব্যয় বেশি বলে তারা এই শিল্প থেকে অনেকটা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এখানকার কুমাররা অতীতের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে আছে। শুধুমাত্র ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এই দুই পরিবার মাটির শিল্পকর্ম করে যাচ্ছে। তারা এ পেশাটি ছেড়ে অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত হয়ে নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহি এ শিল্পটি একেবারে বিলুপ্ত না হোক এমনটাই প্রত্যাশা কতিপয় কুমার শিল্পীদের।

Exif_JPEG_420