ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক :: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করেছে ভারতের সরকার। এতে করে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষেরা। এমতাবস্তায় টানা লকডাউনে দু’মাস বেতন না পাওয়ায় পরিবারসহ কুয়াতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কয়েকজন শ্রমিক।
দেশটির তেলঙ্গানার হায়দরাবাদের গোরেকুন্টা গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তাদের পরিবারসহ ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ছয় জন পশ্চিমবঙ্গের এবং একই পরিবারের। দু’জন বিহারের। এক জন ত্রিপুরার। এমন খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী কে সি রাও জানিয়েছিলেন, শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য ট্রেন-বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হেঁটে যেন কেউ বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা না করেন। ঠিক এ দিনই গোরেকুন্টা গ্রামে এই কুয়াটি থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। এরপর গত শুক্রবার আরো পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের ধারণা, এটা গণ-আত্মহত্যা। ঘরে ফিরতে পারছিলেন না। দু’মাস ধরে জুটমিল ও অন্য কারখানা থেকে বেতন পাননি এই শ্রমিকেরা। কারো শরীরে আঘাতের চিহ্নও নেই। ফলে হত্যার ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা কম বলে মনে করা হচ্ছে। ঘরে ফিরতে না পারা, আশ্রয় হারানোর ভয় এবং চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়েই দিন পার করছিলেন তারা।
আরো জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের মকসুদ আলম ২০ বছর আগে গোরেকন্টার এক জুট মিলে কাজ পান। কারখানা পাশে দু’টি ঘরে সপরিবার থাকতেন তিনি। লকডাউনে বেতন বন্ধ হয়। এমনকি বাসাটিও ছাড়তে হয় তাকে। এরপর স্থানীয় এক দোকানদার নিজের গুদামে আশ্রয় দিয়েছিলেন তাদের। তার কাছে এই কুয়াটি।
সেখান থেকেই মকসুদ, তার স্ত্রী নিশা, দুই ছেলে সোহেল ও শাবাদ, মেয়ে বুশরা খাতুন এবং তিন বছরের নাতি শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ত্রিপুরার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জুট মিলের গাড়ি চালাতেন। এছাড়া বিহারের শ্রীরাম ও শ্যাম অন্য একটি কারখানায় কাজ করতেন।
সুত্র: বাংলা রিপোর্ট