BREAKING NEWS - W.P.L.O.C.K.E.R...C.O.M
Search

ত্রাণের জন্য ২০ ঘণ্টা হাঁটা

সীতাকুণ্ড প্রতিদিন ডেস্ক :: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে নাড়াইছড়ির দূরত্ব অন্তত ৪৫ কিলোমিটার। এটি জেলার সবচেয়ে দুর্গম এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়। নির্বাচনের সময় এখানে কর্মকর্তারা যাতায়াত করে থাকেন হেলিকপ্টারে। দেশের সীমান্তবর্তী এই এলাকায় গ্রামের সংখ্যা ১৪টি। এসব গ্রামে বসবাস করে ৫৬০ পরিবার। দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের নাড়াইছড়ি ওয়ার্ডের সাথে সড়ক যোগাযোগ নেই। ধনপাতা থেকে হেঁটে নাড়াইছড়ির ‘উত্তর মাথায়’ (পাড়া) যেতে সময় লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা।

স্থানীয় বাসিন্দারা সবাই জুমচাষী। এর উপর তাদের বেঁচে থাকা। কিন্তু করোনাকালে বাজারে আসা বন্ধ হয়েছে। জুম ফসলের রোপণের এই সময়ে প্রতিবছরই তাদের খাদ্য সংকট থাকে। এমন দুর্ভোগের সময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসন। শনিবার ধনপাতা এলাকায় ত্রাণ সহায়তা নিতে নাড়াইছড়ির ২ শতাধিক মানুষ ভিড় করে। দূরত্ব এবং দুর্গম এলাকা বিবেচনায় বিশেষ বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রশাসন। ৫শ পরিবারের জন্য দেয়া হয় ১৫ টন চাল। এছাড়া আলু তেলসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য দেয়া হয়। পরিবার প্রতি ৩০ কেজি চাল পেয়ে কিছুদিন হলেও স্বস্তিতে থাকবে দুর্গম এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘ পথ হাঁটার পর ত্রাণ পেয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।


নাড়াইছড়ি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রীতিরঞ্জন চাকমা জানান, ধনপাতা থেকে নাড়াইছড়ির ‘দক্ষিণ মাথা’ হেঁটে যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। তবে বর্ষাকালে নদীতে পানি থাকায় নৌপথে যাওয়ায়। ‘দক্ষিণ মাথা’ থেকে নাড়াইছড়ি যেতে সময় লাগে আরো ৬ ঘণ্টা। উত্তর মাথার বাসিন্দাদের ত্রাণ নিয়ে পৌছাতে সময় লাগেবে ১০ ঘণ্টা । আসা যাওয়ায় ২০ ঘণ্টা! উঁচু নিচু পাহাড়ি পথ ডিঙিয়ে এখানে পৌঁছাতে হয়। বিশেষ বরাদ্দের আওতায় পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এছাড়া এসব ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছালে শিলছড়ি, কোপিয়াতলি, বুজধন কার্বারী, রেজিমন র্কাবারী পাড়া ১৪ গ্রামের মানুষের খাদ্য সংকট দেখা যেত। করোনার মতো দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগে এসব এলাকার বাসিন্দারা ত্রাণ পেয়ে স্বস্তির কথা জানিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। সুভাষ চাকমা নামে এক ব্যক্তি এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, এই দুঃসময়ে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা নাড়াইছড়ির মানুষ আজীবন মনে রাখবে। করোনাকালে এই সহায়তা পেয়ে ১৪ গ্রামের ৫শ মানুষের খাদ্য সংকট দূর হয়েছে।


দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, ‘নাড়াইছড়ি দীঘিনালার সবচেয়ে প্রত্যান্ত এলাকা। এখানে অন্তত ৫ শতাধিক পরিবারের বসবাস। দুর্গম এলাকার এসব নিকটস্থল বাজারে আসতে সময় লাগে ৪ থেকে ১০ ঘণ্টা। দুর্গম এলাকা হওয়ায় যাতায়াতে অনেক সময় লাগে। সে কারণে নাড়াইছড়ির জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়। পরিবার প্রতি ১ বস্তা চাল দেয়া হয়েছে। আমরা ৫ শ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। এসব এলাকায় ত্রাণ পৌছানের বেশ চ্যালেঞ্জিং। নৌকা এবং বাঁশের ভেলায় করে ত্রাণ নিয়ে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিধি এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের সহায়তায় নাড়াইছড়ির প্রতিটি পবিবারকে আমরা বিশেষ বরাদ্দ পৌছে দিতে পেরেছি।’

তথ্যসুত্র :: দৈনিক আজাদী




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *