BREAKING NEWS - W.P.L.O.C.K.E.R...C.O.M
Search

পেটের আগুনে পুড়ছে সীতাকুণ্ডের নরসুন্দররা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরাধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকার ঘোষিত সরকার সাধারণ ছুটির ফলে বন্ধ রয়েছে সীতাকুণ্ডের অধিকাংশ দোকানপাট।

এই পরিস্থিতিতে বার বার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সেলুন মালিক-কর্মচারীরা। সরকারী বিধি নিষেধে দেড় মাস যাবত সেলুন বন্ধ। কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, দোকানপাটসহ গণপরিবহন। ফলে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না।

এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ‘হেয়ার কাটিং সেলুনের’ কর্মী বা নরসুন্দরেরা। ফলে করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন সীতাকুণ্ডের ৫’শতাধিক সেলুন মালিক-কর্মচারী।

সেলুনগুলোতে নরসুন্দর আর খদ্দেরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। ফলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও পাড়া-মহল্লায় দু-একটি সেলুন খোলা আছে। তবে কোনো খদ্দের নেই। ফলে অলস সময় পার করছেন নরসুন্দররা।

ঘোড়ামরা এলাকায় আবির হেয়ার কাটিং বন্ধ থাকতে দেখা যায়। সেলুনের মালিক সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ থেকে সেলুন বন্ধ। কাজ নেই। একদম অলস সময় পার করছি। আমার কাছে যা টাকা ছিল তা দিয়ে পরিবার নিয়ে কয়েকদিন চলেছি। এখন টাকা শেষ হয়ে গেছে। কী করবো বুঝতে পারছি না। ধার-কর্জ করে চলা ছাড়া আর কোনো পথও দেখছি না।

তিনি বলেন, এ বিপদে যতদিন উদ্ধার না হই, ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই। আমাদের মালিকও কোনো সহযোগিতা করেননি। কাস্টমাররা ফোন করে জানতে চায় কখন সেলুন খুলবে। জানতে চায় কখন কাজ করাতে পারবে। 

পাক্কামসজিদ এলাকার প্রেমলাল। স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে চার জনের সংসার। সেলুনের আয় দিয়ে তার সংসার মোটামুটি ভালই চলছিল। কিন্তু করোনা সব এলোমেলো করে দিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে সেলুন বন্ধ রেখেছেন। আয় রোজগার নাই। প্রতিবেশির কাছ থেকে ধারকর্জ করে কোন রকমে চলছেন। সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। 

একই অবস্থা তাপস শীল, শুতাংষু শীলের। দুজনেই বলেন, অন্যের সেলুনে কাজ করতাম। সারাদিন কাজ করে আড়াই’ শ তিন ’শ টাকা রোজগার করতাম। করোনার কারণে মালিক সেলুন বন্ধ রেখেছেন। তাই কাজ করতে পারছি না। আয় রোগজারও নাই। ছেলে মেয়ে নিয়া খুব কষ্টে আছি।

বাড়বকুণ্ডের শুকলাল হাট বাজারের সেলুন মালিক বিকাশ দাস জানান, গত ছয়-সাত দিনেই অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। কোনো রকম খেয়ে, না খেয়ে আছি। সামনের বাকি দিনগুলাতে কী করব বুঝছি না।

সীতাকুণ্ড পৌরসদর সেলুন মালিক সমিতির সভাপতি দিলিপ দাশ বলেন, করোনা আতংকে মানুষ সেলুনে আসছে না। সীতাকুণ্ড পৌর এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক সেলুন মালিক বেকার সময় পার করছেন। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবিক জীবন যাপন করছেন।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *