শেফালী দেবী (সীতাকুণ্ড)::
সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়ায় পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত আদিবাসী পল্লি। যেখানে প্রায় ২০০ জনের অধিক লোক বসবাস করেন। তারমধ্যে বয়স্ক রয়েছে ১২-২০ জন এবং প্রতিবন্ধী রয়েছে ৩ জন। যাদের কেউই এখনো পর্যন্ত কোন ধরণের সরকারী ভাতার অন্তর্ভূক্ত হয়নি।
এ বিষয়ে আদিবাসীদের সর্দার নির্মল ত্রিপুরা বলেন, আমাদের এখানে সরকারী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা কেউ পায়না। এখানে প্রতিবন্ধী আছে, বয়স্ক আছে, বিধবাও আছে। আমরা কারো কাছে আবেদনও করিনি। আমাদের কাউন্সিলর চাইলে আমাদের সরকারী সব সুযোগ সুবিধা দিতে পারে। তিনি না চাইলে কিছুই সম্ভব নয়। আমরা তো ওনাদের দয়ায় ওনাদরে জায়গায় থাকি।”
সরকারের বিভিন্ন ভাতা একটি সামাজিক সুবিধা হলেও এই পল্লিতে কেউ ভাতার আওতায় নেই বলে জানা যায়। এ নিয়ে শংকর ত্রিপুরা বলেন, আমাদের এখানে অনেক এনজিও থেকে লোক আসে, সাংবাদিক আসে আর জিজ্ঞেস করে চলে যায়। কোন ফলাফল আমরা পাইনা। আমাদের এখানে রাস্তাঘাটের সমস্যা, স্কুলে নাই, স্বাস্থ্য কেন্দ্র নাই, সরকারী তেমন কোন সুযোগ সুবিধা আমরা পাইনা। শুনছিলাম উপজেলায় যোগাযোগ করলে নাকি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় কিন্তু কিভাবে যোগাযোগ করবো আমরা তো সেটাই জানিনা।”
অন্যান্য ভাতা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মতো আদিবাসীর সুবিধাবঞ্চিতরাও ভাতার আওতায় পড়ে। আগামীতে এদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউএসডব্লিও কর্মকর্তা মো: বদিউল আলম। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়ার আদিবাসীদের জন্য এযাবৎকালে আমরা কোন ধরণের কর্মসূচী হাতে নেইনি। তবে অন্য এলাকার ৬-৭ জন ত্রিপুরা বয়স্ক ভাতা পাচ্ছে। সম্প্রতি আদিবাসীদের এককালীন একটা অনুদান দেয়ার জন্য ২০ জনের একটা তালিকা তৈরির জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনারকে দায়িত্ব দিয়েছি। ২০ জনের মধ্যে কুমিরা আদিবাসী ১০ জন এবং সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়া আদিবাসী পাবে ১০ জন।
চৌধুরী পাড়ার আদিবাসীরা সরকারীভাবে পৌরসভা থেকে কিছু ত্রাণ পেয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিউল আলম মুরাদ। অল্প সংখ্যক লোক এর আওতাভূক্ত ছিল। আগামীতে প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক আদীবাসীদের মধ্যে একালীন ভাতার ব্যবস্থা সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পল্লির পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটা সুখবর বটে। ভবিষ্যতে এদের জন্য আরও সুব্যবস্থা করা হবে এটাই প্রত্যাশা করেন সুশীল সমাজ।