বিশেষ প্রতিনিধি :: করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়েছে সীতাকুণ্ডের এক হাজারেরও অধিক মৎস্য চাষি। করোনার কারণে মাছ বিক্রি করতে না পেরে মৎস্য চাষিরা পুকুরভরা মাছ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এছাড়াও করোনাভাইরাসের কারণে বাজারে মাছের চাহিদা কমে যাওয়ায় মৎস্য চাষিরা পুকুরের মাছকে অতিরিক্ত সময় ধরে খাদ্য, ওষুধ আনুষঙ্গিক খরচ জোগাতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে বেকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এ পেশায় জড়িত ১০ হাজার মানুষ।
সূত্র জানান, চট্টগ্রামের ৫০ ভাগ আমিষের চাহিদা পূরণ হয় সীতাকুণ্ডের মৎস্য প্রকল্প থেকে। উপজেলার সৈয়দপুর, গুলিয়াখালী, বহরপুর, বাড়বকুণ্ডের বেড়িবাঁধ এলাকার মৎস্য প্রজেক্টসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি নিয়ে এই মৎস্য প্রকল্প। এই মৎস্য প্রকল্পের সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
হিসেব মতে, সীতাকুণ্ডের এসব মৎস্য প্রজেক্ট থেকে দৈনিক উৎপাদিত প্রায় ৫৭ মেট্রিক টন মাছ। মাসে উৎপাদন হয় প্রায় ১৮শ মেট্রিক টন। চাষ হওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া পাংগাস ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় নাইলেটিকা জাতের তেলাপিয়া। যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে হয়। সীতাকুণ্ডে এসব মৎস্য প্রজেক্ট থেকে উৎপাদিত মাছ উপজেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে বিপাকে পড়েছে সীতাকুণ্ডের মৎস্য চাষিরা। ক্রেতা কমে যাওয়া ও পরিবহণ সংকটে জেলা শহরগুলোতে মাছ সরবরাহ করতে না পারায় বড় অংকের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন তারা।
তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা সরকারের ঘোষিত প্রণোদনার আওতায় পড়বেন। সেক্ষেত্রে ৫% সুদে তাদের ঋণ দেয়া হবে। একাধিক মৎস্য খামারের মালিক জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকিতে হঠাৎ মাছের চাহিদা কমে গেছে। এতে আমাদের মৎস্য খামারের মাছগুলো বিক্রির উপযোগী হলেও আমরা তা বিক্রি করতে পারছি না। ফলে আমরা বড় অংকের ক্ষতির আশঙ্কা করছি। তারা দাবি করেন সরকার মৎস্য চাষিদের প্রণোদনা না দিলে বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়বেন মৎস্য খামারিরা। তারা আরো জানান, প্রতিটি মৎস্য খামারে সর্বনিম্ন ৫ থেকে সব্বোর্চ ১৫ জন লোক কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া মাছ বিক্রি, পরিবহণ, খাদ্য বাজার জাতকরণে রয়েছে কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ। সব মিলিয়ে এই অঞ্চলে মৎস্য খামারগুলোর সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষ জড়িত রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য মোহাম্মদ শামীম আহমেদ বলেন, করোনার প্রভাবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ ও সাধারণ ক্রেতা কমে যাওয়ায় মাছের চাহিদা কমে গেছে। ফলে সারাদেশের মতো সীতাকুণ্ডের মৎস্য চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে যারা ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষি তারা ৫% সুদে সরকারি প্রণোদনা নিতে পারবেন।