বিশেষ প্রতিনিধি :: শঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সীতাকুণ্ডের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল বুধবার সকালে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ১০৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন তিন নারী-পুরুষ। এদিকে সংক্রমণের দিক থেকে এ উপজেলাকে ইতোমধ্যে করোনার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এর পরও অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ডে শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণের হার বেশি। ফলে প্রশাসন ইতোমধ্যে এই উপজেলাকে করোনা সংক্রমণের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এরপরও এখানে তেমন জনসচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রতিদিনই এখানে হাটবাজারে অসংখ্য মানুষের দেখা মিলছে। নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার ছাড়াও তারা জামা-কাপড়-সাজসজ্জার সরঞ্জাম কিনছেন। তাছাড়া এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কিংবা মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহার করা তা মানছেন না অনেকেই। ফলে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
গতকাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, এ সময় পর্যন্ত এখানে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০৬ জন। এছাড়া মারা গেছেন তিনজন। প্রথম মৃত্যু ঘটে সৈয়দপুর ইউনিয়নে, সেখানে এক যুবক মারা যান। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতেও সলিমপুরের লতিফপুরে আলী আকবর নামক (৪৫) নামক ব্যক্তি মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। এর আগে একই ইউনিয়নে এক বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ আরো জানান, আমরা শুরু থেকেই অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হতে অনুরোধ করে আসছি। জরুরি প্রয়োজনে কেউ বাইরে গেলেও তিনি যেন অবশ্যই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করেন সে কথাও বলেছি বারবার। আর সামাজিক দূরত্বের কথা তো প্রতি মুহূর্তেই বলছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বাজারগুলোতে গেলে মনে হয় আমরা যেন করোনা জয় করে ফেলেছি! মানুষ নিজেকে রক্ষার গুরুত্বও যদি না বোঝে তবে তাদেরকে আর কিভাবে বোঝানো যাবে? তিনি আরও বলেন, আশার কথা হচ্ছে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও বেশিরভাগ রোগীর শরীরেই তেমন কোনো উপসর্গ নেই। ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে তারা সুস্থ হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে ১০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫০ জন সুস্থও হয়ে উঠেছেন।
এদিকে সচেতন না হওয়ায় হতাশ সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়। তিনি বলেন, এখানে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। এজন্য এটি করোনার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে জনগণকে সচেতন করেছি আমি। কিন্তু আশানুরূপ সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। মানুষ একেবারে স্বাভাবিক সময়ের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অভিযান চালালে তখন তারা চলে যান আবার আমরা ফিরে আসার পর শুনি আগের মত অবস্থা। নিজে যদি নিজের ভালো না বোঝে তাহলে তাদেরকে কি করে বোঝানো যাবে? করোনাকে অবহেলা না করে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহারসহ নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।