তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক::
ফোটন বা আলোক কণা, যেটিকে শক্তিশালী ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপেও দেখা অসম্ভব সেই কণাকে নাকি খালি চোখেই দেখা সম্ভব। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন অসম্ভবকে সম্ভব করার গল্পই বলেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, একেবারে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আলোক কণাকে খালি চোখেই শনাক্ত করা সম্ভব, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও যেটা করতে সক্ষম হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের রকফেলার ইউনিভার্সিটি ও অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনার বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন। তারা দেখিয়েছেন, অতি অন্ধকার (সুপার ডার্ক) পরিবেশে মানুষের চোখ আলোক কণাকে শনাক্ত করতে পারে। মানুষের চোখের এমন অবিশ্বাস্য ক্ষমতার ক্থা এই প্রথম জানালো বিজ্ঞানীরা।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই যুগেও কিন্তু আলোক কণাকে সরাসরি শনাক্ত করার কোনো যন্ত্র কেউ উদ্ভাবন করতে পারেনি।
তাহলে খালি চোখে এটি কী করে সম্ভব? মানুষের চোখে আলোকসংবেদী দুই ধরনের কোষ থাকে, একটি রড আরেকটি কোন। রড সেল আছে ১২ কোটি, এসব সেল অন্ধকারে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। যেখানে বর্ণ শনাক্তকারী কোন সেল রয়েছে মাত্র ৬০ লাখ।
অবশ্য ১৯৪০ এর দশকেই বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছিলেন, অতি অন্ধকারে মানুষের চোখ পাঁচ থেকে সাতটি ফোটন কণার ঝলক শনাক্ত করতে সক্ষম। কিন্তু চোখ যে আরো সূক্ষ্ণতম কণা শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে সেটা জানা ছিল না।
এই পরীক্ষার জন্য এক দল গবেষক ২০ বছর বয়সী একজনকে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসিয়ে রেখে একটি যন্ত্রের সাহায্যে একবারে একটি মাত্র ফোটন ছুড়ে দেয় এবং পরেরবার বন্ধ রাখে। তিন জনকে এভাবে ৩০ হাজারবার পরীক্ষা করা হয়।
প্রত্যেকবারই তিন জনকে অন্ধকার ঘরে যেখানে আলো এবং শব্দ থেকে বিচ্ছিন্ন করে বসিয়ে রাখা হয়। তাদের কানে থাকে একটি হেডফোন। মাথাটি স্থির রাখার জন্য একটি যন্ত্রের উপর বসিয়ে দেয়া হয়। আর ডান চোখটি একটি মৃদু লাল আলোর দিকে তাক করে রাখতে বলা হয়।
তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, পরীক্ষায় অংশ নেয়া তিন জন তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় বলেছেন, তারা মূলত কোনো আলো দেখেনি। ওটা আলো নয় বরং একটা অনুভূতি, যেটা কল্পনার কাছাকাছি!
গবেষণাপত্রটি প্রকাশত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচারে।